যশোররে টেকসই কৃষি সম্প্রসারন প্রকল্প ২০২৭ সালে চালু হবে


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : আগস্ট ১০, ২০২২, ১০:১৫ অপরাহ্ণ / ১১০
যশোররে টেকসই কৃষি সম্প্রসারন প্রকল্প ২০২৭ সালে চালু হবে

যশোররে টেকসই কৃষি সম্প্রসারন প্রকল্প ২০২৭ সালে চালু হবে। যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৮,৬২০ জন কৃষকের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি হবে। এছাড়া ব্যয় সাশ্রয়ী ও ফলপ্রদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে ফসলের উৎপাদনশীলতা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় ২০ শতাংশ কম করে কৃষিকে লাভজনক করা হবে।

এই প্রকল্পটি ২০২৭ সাল নাগাদ চালু হবে। পাশাপাশি খোরপোশ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের জন্য ১৮০০ জন শিক্ষিত তরুণ ও নারী কৃষি উদ্যোক্ত তৈরি করা হবে। ‘যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে এসব লক্ষ্য অর্জন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ৯ মার্চ হয় প্রকল্প
মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদাপূরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং উৎপাদন থেকে
বিপণন পর্যন্ত সকল পর্যায়ে কৃষককে লাভজনক করা আবশ্যক। এ উদ্দেশ্য অর্জনে উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন, টেকসই কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সংগ্রহ এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের কৃষির মূল ধারায় অন্তভুক্ত করা অপরিহার্য।

বাংলাদেশে পুষ্টিকর উচ্চমূল্যের শস্য উৎপাদন, কৃষি পণ্য বিপণনে অঞ্চলভিত্তিক সম্ভাবনা ও সুযোগ কাজে লাগানো, শিক্ষিত নারী, তরুণ ও
যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অবদান রাখার জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ৩৪,৬৬২ টি কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এছাড়া ৬২ টি কৃষি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র নির্মাণ, ৩১৮ টি বিদ্যুৎবিহীন কুলিং চেম্বার, ৯৩ টি কৃষি প্রযুক্তি মেলা, ১২৪ টি উদ্বুদ্বকরণ ভ্রমণ, ৩৪৬৬ টি মাঠ দিবস আয়োজন, ২৬৯২ ব্যাচ অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ এবং ৩০,৯৫৯ টি কৃষি সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে।

প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলকা গুলো হচ্ছে, যশোর জেলার যশোর সদর, শার্শা, মনিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, বাঘারপাড়া এবং অভয়নগর উপজেলা। মাগুরা জেলার মাগুরা সদর, শালিখা, শ্রীপুর ও মহম্মদপুর উপজেলা। ঝিনাইদহ জেলার ঝিনাইদহ সদর, মহেশপুর, হরিণাকুন্ড, কোটচাঁদপুর, শৈলকুপা এবং কালীগঞ্জ উপজেলা। কুষ্টিয়া জেলার কুষ্টিয়া সদর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মিরপুর, খোকসা ও কুমারখালী উপজেলা। চুয়াডাঙ্গা জেলার চুয়াডাঙ্গা সদর, দামুড়হুদা, জীবননগর, আলমডাঙ্গা মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর এবং গাংনী উপজেলা।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি নেওয়ার আগে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট প্রযুক্তি এবং কার্যক্রম প্রতিপালর করে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ, কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের স্বার্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রকল্পের ঝুঁকি হিসাবে যশোর অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড় বৃদ্ধি এবং
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াকে চিহিৃত করা হয়েছে। এসব ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ,বারিড পাইপ সেচ
প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, নিরাপদ উপায়ে চারা উৎপাদন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ দেশের সমুদ্র বন্দরসমূহে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, খুলনা বিভাগের যশোর অঞ্চলে উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন, শস্য উৎপাদনে বৈচিত্রতা আনা হবে।

এছাড়া নিরাপদ ফসল উৎপাদন, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ এবং জাতীয় পুষ্টির
চাহিদাপূরণ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ও কার্যক্রম সম্প্রসারণে প্রকল্পটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

Spread the love
Link Copied !!