বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্যই বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩, ১০:২১ পূর্বাহ্ণ / ৩০
বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্যই বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

 

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে ছয় জেলায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। শনিবার বিকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের তেজগাঁওয়ের কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনসভায় বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। কুষ্টিয়ার পাবলিক লাইব্রেরি, ঝিনাইদহের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠ, সাতক্ষীরার সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনার জেলা স্টেডিয়াম, রাঙামাটির শেখ রাসেল স্টেডিয়াম এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। পরে তিনি এসব স্থানের উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী দল আর জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নকে সচল রাখার জন্যই বিএনপি-জামায়াত উভয়ের হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে।’

নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির ‘আগুন রাজনীতির’ সমালোচনা করে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কার কথায় নেচে পাপের ভাগিদার হচ্ছেন আপনারা। আপনাদের হুকুম দিচ্ছে আর আপনারা নাচেন। কার জন্য নাচেন, ওতো দেশেই আসে না।’

নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সামনে ইলেকশন। এই ইলেকশন আমরা এবার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কারণ আমরা চাই জনগণ অংশগ্রহণ করুক, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিক। সবাই জনগণের কাছে যাবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে সে নির্বাচিত হবে। আমি চাই, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক এবং জনগণের যে ভোটাধিকার, সেটি তারা প্রয়োগ করতে পারুক। গণতন্ত্রকে আমরা সুরক্ষিত করতে চাই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকলে যে দেশের উন্নতি হয় সেটার প্রমাণ আমরা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির নেতা কে সেটাই প্রশ্ন। দুটোই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এরপরও তার ভাইবোন এসেছিল আমার কাছে, মানবিকতার জন্য তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি। আর তারেক জিয়া, যারা আমাকে গ্রেনেড হামলা করে মারতে চেয়েছিল, গুলি করেছে, হামলা করেছে, তারপরও আমরা এই মানবিকতা দেখিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির যারা নেতাকর্মী আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়…আমি বলব যারা পোড়াচ্ছেন পাপের ভাগিদার আপনারাই হবেন। তারেকের কিছুই হবে না। ওতো ওখানে জুয়া খেলে ভালো আছে। আপনাদের হুকুম দিচ্ছে আর আপনারা নাচেন। কার জন্য নাচেন, ওতো দেশেই আসে না। মা মরে মরে, তাকে দেখতেও তো আসে না। এত সাহস থাকলে একবার দেশে এসে দেখুক না। এদেশের মানুষ এই যে হত্যাকান্ড এর প্রতিশোধ তারা নেবেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের ধারাটি তখনই অব্যাহত থাকবে যখন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থী বেছে নেবে এবং গণতান্ত্রিক ধারাটি অব্যাহত থাকবে।’

নির্বাচন ঠেকানোর জন্য ২০১৩ সালের মতো বিএনপি আবারও অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাসে ঘুমিয়ে আছে হেলপার তাকে পুড়িয়ে দিল। রেলে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা। একটা মা তার শিশুকে বুকে নিয়ে বসে আছে। সে মা-শিশু পুড়ে কয়লা হয়ে গেল। কারও মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ থাকলে সে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে না।’

বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে না দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আর জামায়াতের হাতে কখনও এ দেশ নিরাপদ না। কারণ তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কারণেই ঢাকা থেকে ছয়টি জেলার সঙ্গে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে মতবিনিময় করা সম্ভব হয়েছে উলেস্নখ করে গত ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বাবা-মা সব হারিয়ে ফিরে এসেছিলাম এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে, দেশ উন্নত করতে। ঘোষণা দিয়েছিলাম এদেশের মানুষই আমাদের পরিবার। তাদের জন্যই আমি নিজেকে উৎসর্গ করেছি।’

এ সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিক্রি করতে দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে সেই রাজনীতি আমি করি না। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। এদেশের মানুষের জন্যই আমার রাজনীতি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যেভাবে হঁ্যা-না ভোটের মাধ্যমে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, ঠিক একইভাবে বিএনপির চরিত্র ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত। অত্যাচার-নির্যাতনের চিহ্ন এখনও অনেক নেতাকর্মী বয়ে বেড়াচ্ছেন।’

Spread the love
Link Copied !!