হঠাৎ করেই কাঁচা মরিচের বাজারে ধস


টি আই শাহীন
প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২, ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ / ১০৩
হঠাৎ করেই কাঁচা মরিচের বাজারে ধস

বগুড়ার পাইকারি বাজার মহাস্থান হাটে কাঁচা মরিচের দামে হঠাৎ করে ধস নেমেছে। এ বাজারে মাঝারি মানের প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ গতকাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়। এক মাস আগেও এই দাম ছিল ২৪০ টাকা। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় হঠাৎ করে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের দামে এ ধস নেমেছে। বগুড়ার মহাস্থান হাট থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা মরিচসহ নানা ধরনের সবজি সরবরাহ করা হয়।

চাষিরা বলছেন, খেত থেকে হাটে নেওয়া পর্যন্ত প্রতি কেজি কাঁচামরিচে গড়ে তিন টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া রয়েছে খাজনা ও অন্যান্য খরচ, এ বাবদ খরচ হয় আরও এক টাকা। ফলে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করে চাষিরা পাচ্ছেন ছয় টাকা, যা এক কাপ চায়ের দামের সমান। বগুড়ায় এক কাপ চা বিক্রি হয় ৬ থেকে ১০ টাকায়।

আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল মহাস্থান হাটে পাইকারিতে ভালো মানের প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল সর্বোচ্চ ২০ টাকা। মঙ্গলবার এ বাজারে ভালো মানের প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৩০ টাকা। মাঝারি মানের কাঁচা মরিচ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। আর এক মাস আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের গড় দাম ছিল ২৪০ টাকা।

গতকাল বুধবার মহাস্থান হাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে আসেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আবু সুফিয়ান (৫০)। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ১০ টাকা দরে ২০ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করেন তিনি।

মহাস্থান হাট থেকে কাঁচা মরিচ যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজার, মিরপুর কাঁচাবাজারসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও ফেনীর বিভিন্ন বাজারে। কাঁচা মরিচের দামে ধস নামায় উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে জানান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফাঁসিতলা গ্রামের কৃষক ইসহাক আলী। তিনি বলেন, যে দামে এখন মরিচ বিক্রি হচ্ছে, তাতে চাষের খরচই উঠছে না।

মহাস্থান হাটের সবজির আড়তদার মোস্তা ট্রেডিংয়ের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সবজির দাম নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এখন কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির দাম কমে গেছে।

এদিকে মহাস্থান হাটের ১০ টাকা দামের কাঁচা মরিচ বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের খুচরায় বিক্রি হয় ৪০ টাকা কেজিতে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কয়েক হাত বদলেই দাম বেড়ে খুচরায় চার গুণ হয়ে গেছে। মহাস্থান হাট আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাস্থান হাট থেকে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। এ দূরত্বে এক কেজি কাঁচামরিচ বা সবজি পাঠাতে সর্বোচ্চ দেড় টাকা খরচ হয়। অথচ দাম বেড়ে যাচ্ছে চার গুণ। হাত বদলে বাড়তি দামের সুফল পাচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।

তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম বলেন, আড়ত থেকে কেনা দামের চেয়ে খুচরা বিক্রেতা সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বেশি দামে মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বিক্রি করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আড়তের চালান বা ক্রয় রসিদ সঙ্গে রাখতে হবে। এর বেশি দামে কেউ বিক্রি করলে সেটি অপরাধ।

(সংগৃহীত)

Spread the love
Link Copied !!