মুজিবকে মুচলেকা দিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ না দেয়ার র্বাতা পাঠিয়েছিলেন বঙ্গমাতা


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : আগস্ট ৭, ২০২২, ২:৩০ অপরাহ্ণ / ৪১
মুজিবকে মুচলেকা দিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ না দেয়ার র্বাতা পাঠিয়েছিলেন বঙ্গমাতা

মুজিবকে মুচলেকা দিয়ে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ না দেয়ার র্বাতা পাঠিয়েছিলেন বঙ্গমাতা। প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বা মুচলেকা দিয়ে আইয়ুব খানের ডাকা গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেয়া সম্পর্কিত দলের কতিপয় নেতার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বন্দি মুজিবের কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন বঙ্গমাতা ফজলিাতুন নেছা মুজিব।

ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সমঝোতা করলে তার সামরিক বাহিনী তাদের সুবিধামত যে কোন সময়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করবে বলে আরো পরে তিনি তাকে (বঙ্গবন্ধুকে) সাবধান করে দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধুকে ৭ মার্চের ভাষণের আগেও অনেকে অনেক রকম পরামর্শ দিলেও সঠিক পরামর্শটি দিয়েছিলেন তাঁর সহধর্মিনী। তিনি বঙ্গবন্ধুকে একটি কথাই বলেছিলেন।, তিনি যেন তাঁর নিজের মনে যা আছে তাই, ওই ভাষণে বলেন।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বা মুচলেকা দিয়ে আইয়ুব খানের ডাকা গোলটেবিলে যোগ দেয়া সম্পর্কিত দলের কতিপয় নেতার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বঙ্গবন্ধুর কাছে বার্তা পাঠিয়ে অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেন বঙ্গমাতা।

রণর্মুতি ধারণ করে সেদিন তিনি বঙ্গবন্ধুকে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি হাতে বঁটি নিয়ে বসেে আছেন।, প্যারোলে মুচলেকা দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যেতে পারেন, কিন্তু, তাতে তাঁর জীবনের তরে ৩২ নম্বরে আসা বন্ধ হবে।

প্রয়াত সাংবাদিক এবং লেখক এবিএম মূসা তার ‘মুজিব ভাই’ গ্রন্থে এ ব্যাপারে লিখেন, শেখ মুজিব যদি মুচলকো দিয়ে সহবন্দীদের ক্যান্টনমেন্টে রেখে রাওয়াল পিন্ডি যেতেন এদেশের ভবিষ্যত ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো।

আরও পড়ুন: ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হলেন জগদীপ ধনকড়

এবএিম মূসা লিখেন, ঢাকা সেনানিবাসে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার চলছে। সাল ১৯৬৯। গণ-অভ্যুত্থানে বিধ্বস্ত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান গোল টেবিল বৈঠক ডাকলেন। কিন্তু, পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবকে বাদ দিয়ে গোলটেবিল বৈঠক হয় কী করে। শেষ র্পযন্ত আইয়ুব খান বৈঠক সফল করতে রাজনৈতিক নেতাদের চাপে বাধ্য হলেন কারাবন্দী শেখ মুজিবুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানাতে কিন্তু, দেশদ্রোহের দায়ে বিচারের আসামি ক্যান্টনমেন্টে বন্দী মুজিব আসবেন।

কিভাবে আইয়ুব খান সিদ্ধান্ত নিলেন প্যারোলে মুক্তি দিয়ে তাঁকে রাওয়ালপিন্ডি নিয়ে যাওয়া হবে।
ফেব্রুয়ারির ১৭ বা ১৮ তারিখ থেকে বিভিন্ন মহল শেখ সাহেবকে প্যারোলে যাওয়ার প্রস্তাব দিতে থাকে। অনেকে জেলে দেখা করে তাঁকে একই অনুরোধ করেন। এদিকে ঢাকায় তখন শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে কারফিউ ভেঙ্গে রোজ রাতে মানুষের ঢল নামছে রাস্তায়।

অন্যদিকে ক্যন্টনমেন্টে বসে শেখ সাহেব কি ভাবছনে, কেউ তা জানে না। সারা দেশের মানুষও কিছুটা বিভ্রান্ত। তারা প্রাণ দিচ্ছেন, রক্ত দিচ্ছে নেতাকে মুক্ত করে আনার জন্য। মুচলকো দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যাওয়ার জন্য নয়। কিন্তু, এব্যাপারে সিদ্দান্ত নেবেন যিনি তিনিও ছিলেন দ্বিধাগ্রস্ত।

সেদিন, মুচলেকা দিয়ে নাকি নিঃশত মুক্তি এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একজন নারী। মুজিবের সহধর্মিণী, যিনি রাজনীতি বুঝতনে না, কিন্তু নিজের স্বামীকে জানতেন। বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর স্বামীর মানসিক দন্দ্ব। বন্দি স্বামীকে খবর পাঠালেন ‘হাতে বঁটি নয়িে বসে আছি। প্যারোলে মুচলকো দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যেতে পার, কিন্তু, জীবনে ৩২ নম্বরে আসবে না।’

Spread the love
Link Copied !!