খনির নতুন ফেজে কয়লা উত্তোলন শুরু : বড় পুকুরিয়ায় ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : আগস্ট ১০, ২০২২, ১২:৩৬ অপরাহ্ণ / ৫৭
খনির নতুন ফেজে কয়লা উত্তোলন শুরু : বড় পুকুরিয়ায় ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন

বড় পুকুরিয়ায় ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন : খনির নতুন ফেজে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। জেলার বড় পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২টি ইউনিটে ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।

দিনাজপুর বড় পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. ওয়াজেদ আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বড় পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ টি ইউনিটে মধ্যে ১টি ইউনিট থেকে ২৫০ হতে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হতো। দেশে ডিজেল চালিত ছোট-ছোট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ডিজেল সংকটের কারনে বিদ্যুতের উৎপাদন কিছুটা বিঘ্নিত হওয়ায় লোডশেডিং চলছে।

সে কারনেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে এই কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অপর ১ টি ইউনিট আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। এই ইউনিটটির উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫ মেগাওয়াট। আজ উৎপাদন শুরুতেই ৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ২টি ইউনিট থেকে ৩২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আজ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হয়েছে।

তিনি জানান, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির নতুন ফেজের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় কয়লা উত্তোলন গত ৭ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। খনি কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় রেখে দফায় দফায় বৈঠক চলমান রয়েছে। নতুন ফেজ থেকে উন্নয়ন কাজ গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করা হয়েছে। ওই নতুন ফেজ থেকে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন হলে বড় পুকুরিয়ার ৩ টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ ইউনিটের মধ্যে যে ২ টি ইউনিট আজ মঙ্গলবার থেকে চালু রয়েছে ওই ২ টি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন চলমান রাখতে সমন্বয় রেখে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সূত্রটি জানায়, বর্তমানে যে ২ টি ইউনিট চালু আছে তার প্রয়োজন প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার ৫০০ টন কয়লার। খনিতে বর্তমানে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে। নতুন ফেজের উন্নয়ন থেকে যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন হবে সে কয়লাসহ মজুদ কয়লা দিয়ে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন শুরু হওয়া পর্যন্ত ইউনিট ২ টি চালু রাখতে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

দিনাজপুর বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম আজ দুপুর আড়াইটায় জানান, গত জুলাই মাসের ২৫ থকেে ৩১ পর্যন্ত কয়লা খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারনে ৩ দফায় স্বাস্থ্যগত পরীক্ষায় ৫২ জন চীনা এবং ৪৪ জন দেশী শ্রমিকসহ ৯৬ জন শ্রমিককে খনির বাহিরে আইসোলেশনে নিরাপদ রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ভারতেই সারা বিশ্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশী মহিলা পাইলট

ফলে এ ধরনের সংকট থাকায় সাময়িকভাবে কয়লা খনির নতুন ১৪০৬ নং ফেজের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত ৭ দিন পুনরায় শ্রমিক সংকট দূর করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থকেে নতুন ১৪০৬ নং ফেজ থেকে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে কয়লা খনির নতুন ফেজের আংশিক উত্তোলন শুরু করা হয়।

গতকাল কিছু চীনা ও দেশী শ্রমিক মিলে সন্ধ্যা ৭ টা থেকে নতুন ফেজের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করে। গত মঙ্গলবার সকাল ৮ টা থকেে ৩০০ চীনা শ্রমিক এবং ২৩৮ জন দেশী শ্রমিকসহ ৫৩৮ জন শ্রমিক নতুন ১৪০৬ নং ফেজের উন্নয়নের কাজ শুরু করে। ফলে গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে মঙ্গলবার ২ টা পর্যন্ত এই ফেজের উন্নয়নে ৮০০ থেকে ৯০০ টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে। আগামীকাল বুধবার এই ফেজের উন্নয়নে আরও ১০০ শ্রমিক যোগদান করবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

সূত্রটি জানায়, আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এভাবে উন্নয়নের কাজ চলমান রাখতে পারলে ১৬ আগস্ট থেকে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন করা যাবে। পুরোদমে কয়লা উত্তোলন করতে পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ সব ধরনের মনিটরিং ও কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনা কোম্পানির সঙ্গে কয়লা উত্তোলন পুরোদমে কাজ শুরু করতে পেট্রাবাংলার পক্ষ থেকে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

পুরোদমে কয়লা উত্তোলন হলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। খনি থেকে কয়লা উত্তোলন স্বাভাবিক থাকলে বড় পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩ টি ইউনিট চালু রেখে ৫০০ মেগাওয়াটের অধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে।

Spread the love
Link Copied !!