ঝিনাইদহে শৈলকুপার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং সেন্টার বিপুল’স কেয়ার থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশের বৃহত্তম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত দেশের ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিস্ময়কর ফলাফল করেছে। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের তৃতীয় সিফটে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন উপজেলার শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজের শিক্ষার্থী সজল আহম্মেদ (সজল) এবং অপরদিকে গুচ্ছভুক্ত ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় ৭৯.২৫ পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন সাদিয়া নুসরাত স্নিগ্ধা। তারা উভয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বিপুল’স কেয়ারে ও দুঃখী মাহমুদ কলেজের শিক্ষার্থী ।
জানা যায়, এছাড়াও বিপুল’স কেয়ার সহ দুঃখী মাহমুদ কলেজ হতে ঢাবিতে মোহসিনা মুন্নি ২৯ তম সহ অর্ধশতাধিকপর বেশি শিক্ষার্থী ঢাবি, রাবি,সহ দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা সাদিয়া নুসরাত স্নিগ্ধা বলেন,ঢাবি,রাবি,গুচ্ছ সহযা পেয়েছি সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। সুশৃঙ্খল নিয়মমাফিক অ্যাডমিশন জার্নির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সহায়ক বিপুল’স কেয়ারকে অন্তরের অন্তরস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়। ও শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজের প্রিয় অধ্যক্ষ আসাদুর রহমান শাহিন স্যার, লাভলু স্যার ও অ্যাড. বিপুল আমরান স্যার আমার এই যাত্রায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বলে আমি মনে করি।
তিনি আরো বলেন, জীবনের এ পথচলায় প্রতিটি শিক্ষকের মূল্যবান উপদেশগুলো বটবৃক্ষের মতো আমাকে আগলে রেখেছে । মহান আল্লাহর রহমতে দেশসেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর রাজশাহী ও গুচ্ছতে পরীক্ষা দিয়ে অসাধারণ ফলাফল করেছি। আমি আমার পরিবারের পছন্দ অনুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হতে চাই।
রাবিতে তৃতীয় সিফটে প্রথম সজল আহম্মেদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। ঢাবি ও রাবির এ ইউনিটে আমি তেমন ভালো ফলাফল করতে পারিনি সে জন্য ভাগ্যকে দোষারোপ করেছিলাম। আমার প্রিয় অ্যাড. বিপুল আমরান স্যারের কথামতো আমি বি ইউনিটে ফরম তুলি। সেখানে যে এত ভালো কিছু অর্জন করতে পারবো এটা আমি কখনো ভাবতেই পারিনি। আমি এ সাফল্যের জন্য পরিবারের অনুপ্রেরণার পশাপাশি সবচেয়ে বড় স্থান দেব আমারে কলেজের সকল শিক্ষক ও অ্যাড. বিপুল আমরান স্যারকে। স্যারদের কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
এ বিষয়ে মোহসিনা মুন্নি বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় “খ” ইউনিট থেকে মেধাক্রম(২৯) নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি এবং আইন বিষয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছি। আমার আজকে যতটুকু সফলতা,আমার এই স্বপ্ন পুরণ, সেইটা শুধু মাত্র সম্ভব হয়েছে আমার পরিবার ও আমার শিক্ষকবৃন্দের অনুপ্রেরণার জন্য।আর অবশ্যই মহান আল্লাহর রহমত তো অবশ্যই আছেই। আমার স্কুল-কলেজের সকল শিক্ষকবৃন্দের কাছে চির কৃতজ্ঞ যারা আমাকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। আর এই তালিকায় যার কথা না বললেই নই,তিনি শ্রদ্ধেয় এ্যাড. বিপুল আমরান স্যার। আমি সত্যি গর্বিত যে উনার মতো একজন পথপ্রদর্শক হিসাবে আমি পেয়েছি আমার কলেজ জীবনের শুরু থেকে।সেই সাথে প্রিয় প্রতিষ্ঠান “বিপুল’স কেয়ার” এর অগ্রগতির কথা উল্লেখ করতেই হচ্ছে। আমি এই প্রতিষ্ঠান এর একজন সদস্য হিসেবে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
এ বিষয়ে শিক্ষাজ্ঞানে প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সহায়ক প্রতিষ্ঠান বিপুল’স কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক অ্যাড. বিপুল আমরান বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেও পার্শবর্তী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছোঁয়া পেয়ে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা অর্জনের আগ্রহ খুবই বেশি বাড়ছে। যার পলে আমাদের আধুনিক কোন শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকলেও শিক্ষার্থীদের প্রতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে ও মহান আল্লাহর রহমতে প্রতিবছর ঢাবি, রাবি, জাহাঙ্গীরনগর সহ গুচ্ছ অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে প্রায় অর্ধশতাধিকের উপরে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। রাবিতে প্রথম ও গুচ্ছে দ্বিতীয় হওয়া সজল- সাদিয়া নুসরাত স্নিগ্ধা শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজের কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। বিশেষ করে এ অঞ্চলে উচ্চশিক্ষা অর্জনে আমাদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজের অসামান্য অবদান রয়েছে।
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, এলাকায় যত মানুষ শিক্ষিত হবে তত এলাকার উন্নতি হবে। এবছর এ সেরা দুজন বাদে ঢাবি রাবিতে পাঁচ থেকে ছয়জন আইনের মতো সেরা বিষয় পাবেন বলে আশাবাদী তিনি।
তিনি আরোও জানান, আমাদের থেকে সবমিলিয়ে অর্ধশতাধিক উচ্চশিক্ষার গণ্ডিতে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই আমাদের কাছে উচ্চমাধ্যমিক থেকে ইংরেজি ও বাংলা পড়তে আসতেন। সবচেয়ে বিশেষ সুবিধা এ অঞ্চলে উন্নত নগরীর মতো বিলাসবহুল খরচ নেই তবে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রদানে আমাদের গরিব ও অর্থনৈতিক সমস্যার শিক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। টাকার কারণে কখনো উচ্চশিক্ষার প্রচেষ্টা বন্ধ হবেনা ।
শেখপাড়া দুঃখী মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুর রহমান শাহিন বলেন, এবারে সজল আহম্মেদ ও সাদিয়া নুসরাত স্নিগ্ধার ফলাফল জানতে পেরে খুবই খুশি হয়েছি। প্রতিবছর উচ্চশিক্ষায় উপজেলা থেকে যে সংখ্যক শিক্ষার্থী সুযোগ পাচ্ছে তাদের মধ্যে সিংহভাগ আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। মূলত এমন কৃতী শিক্ষার্থীদের জন্যই ফলাফলের দিক থেকে বার বার উপজেলার সেরা কলেজ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। দীর্ঘ প্রায় দুই বছরের নিবিড় পর্যবেক্ষণের কারণে আমাদের এ শিক্ষার্থীদের এ অসামান্য অবদান বলে আমি মনে করছি। আমাদের কলেজে অন্য সরকারী কলেজের মতো উচ্চ দালান অট্টালিকা না থাকলেও আমাদের শিক্ষকদের প্রচেষ্টা রয়েছে ব্যাপক। আমাদের শিক্ষকেরা ব্যাচে ব্যাচে ভাগ করে শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে রেখে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে থাকে।
আরও পড়ুন: ভয়াল ২১আগষ্ট, এটা কোন রাজনৈতিক সংস্কৃতি !
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা কার্যক্রমের বেশিরভাগ তথ্য কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মো. রবিউল লাভলুর কাছে হিসাব থাকে। আমরা গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকি। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে অনেকের থেকে শুধু নামমাত্র ভর্তি ফি নিয়ে ফরম ফিলাপের সুযোগ করে দিয়ে তাদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের ধাপগুলো এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছি। আমাদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী আইনজীবী বিপুল আমরান শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ ও টিউটরিং করেন। কলেজ ও তাদের সমন্বয়ে প্রতিবছরে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এ অঞ্চল থেকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান। এবছরে যে সজল-সাদিয়া প্রথম দ্বিতীয় হলেন এটা দুই প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :