জমি নিয়ে বিরোধ: ভাতিজাদের আঘাতে চাচার মৃত্যু নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২, ২:৩৪ অপরাহ্ণ / ১৬৫
জমি নিয়ে বিরোধ: ভাতিজাদের আঘাতে চাচার মৃত্যু নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

গাইবান্ধাঃ জেলার সুন্দরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজাদের আঘাতে আপন চাচা মকিজল হকের মৃত্যু নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ভাতিজাদের আঘাতে নয় চাচার স্বাভাবিক মৃত হয়েছে।

আপন চাচা পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৭ জনের নামে মামলা করেছে নিহতের স্বজনরা। গত রোববার বিকেলে উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের উত্তর বেকাটারী গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত মকিজল ওই এলাকার মৃত বাহাদুল্লা ব্যাপারীর ছেলে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী খতেজা বেগম বাদী হয়ে আপন ভাতিজা মকবুল মিয়াসহ সাতজনের নামে মামলা করেন। এতে এজাহার নামীয় এক মহিলা আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  এঘটনাটি নিয়ে এলাকায় বিভিন্নরূপ মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসি। তার বলছেন আসলেই কি মকিজলকে হত্যা করা হয়েছে? নাকি প্রতিপক্ষ কে ফাঁসাতেই হত্যার রূপদেয়া হয়েছে?

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মকিজল হকের সাথে তার আপন ভাতিজাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার আগের দিন এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একটি শালিস বসে। শালিসি বোর্ডের দেয়া সিদ্ধান্ত তার ভাতিজারা মেনে নিয়ে ওই জমিতে যায়নি। ঘটনার দিন নিহত মকিজল ও তার ছেলেরা বোরো চাষাবাদের জন্য জমিতে পানি নিয়ে গরু দিয়ে হালচাষ করেন। হালচাষের একপর্যায়ে মকিজল জমিতে শীতজনিত কারণে টলে পড়েন। পরে তার ভাতিজা আঞ্জু মিয়াসহ কয়েকজন তাকে কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে এসে মাথায় পানি ঢালেন। এ অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে জনৈক ব্যাক্তির পরামর্শে তার নিথর দেহ আবারও কাঁধে করে নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে রেখে আসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, মকিজল হক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য ছিলেন। এদিন তিনি অসুস্থ অবস্থায় জমিতে কাজ করতে যায়। কাজ করতে গিয়ে ঠান্ডার কারণে টলে পড়ে ঘটনা স্থলেই মারা যায় তিনি। এদিন কোন মারামারি হয়নি। সেই সাথে মামলার অধিকাংশ আসামিরাই বিভিন্ন কাজে এলাকার বাহিরে ছিল।

অপর এক প্রতিবেশী বলেন, নিহত মকিজল হকের সাথে তার ভাতিজা মকবুলদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও ঘটনার দিন ওই জমিতে মকবুলরা যায়নি। আর সেদিন তাদের মাঝে কোন মারামারির ঘটনাও ঘটেনি। মকিজল হকের স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেও তার স্বজনরা মকবুলদের ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছেন।

সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। গত রোববার দু’পক্ষের ঝগড়াঝাটি হয়। এরই একপর্যায়ে ভাতিজাদের আঘাতে চাচার মৃত্যু হয়েছে।’

ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হুদা বলেন, ‘এ নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন রকম মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। তাই প্রশাসনের নিকট আমার দাবি, নিরপেক্ষ তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদেরকেই যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়।’

থানা অফিসার ইনচার্জ মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘জমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের কারণ খুঁজতে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে নিহতের কারণ জানা যাবে।’

Spread the love
Link Copied !!