সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি), কবি ও শিশু সাহিত্যিক মাহবুব তালুকদার চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২৪ আগষ্ট) দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। ইউনাইটেড হাসপাতালের গণসংযোগ কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মাহবুব তালুকদারকে দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়, তবে পথেই তার মৃত্যু হয়েছিল। মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি নবাবপুর হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন।

দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন মাহবুব তালুকদার। তারপর দীর্ঘ সময় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরিতে যোগ দেন। পরে তিনি সরকারি চাকরির বছর অবস্থানকালে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কালে তিনি তার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ববি পালন করেন।

মাহবুব তালুকদার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ারয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় অদিষ্ঠিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: ইডেনের দুই ছাত্রীকে নির্যাতন- ছাত্রলীগ সভাপতির বিবস্ত্র করে ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন গঠিত পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছে শপথ নেন মাহবুব তালুকদার।

২০১২ সালে শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। মাহবুব তালুকদার ও তার স্ত্রী নীলুফার বেগম দম্পতির দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে।