জরাজীর্ণ ভবণে পাঠদান,ঝুকিতে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা


বন্ধন টিভি ডেস্ক
প্রকাশের সময় : আগস্ট ২৩, ২০২২, ১:৪১ পূর্বাহ্ণ / ৩৮
জরাজীর্ণ ভবণে পাঠদান,ঝুকিতে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা

জরাজীর্ণ ভবণে পাঠদান,ঝুকিতে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।  ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল। কোথাও কোথাও পলেস্তারা খসে পড়ছে, বেরিয়ে পড়েছে রড। এমন অবস্থায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্যেই পাঠদান চলছে ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলার ১৩১ নং নন্দিরগাতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীরা বলছে,
বিদ্যালয় ভবনের এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গায়ে পড়ছে। জরাজীর্ণ ভবনটি এখন শিক্ষক – শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ছাদের পলেস্তারা খসে ৫ম শ্রেণীর খোকন কুমার নামের এক শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলের পাশে খোলা স্থানে পাঠদান করানো হচ্ছে।

জরাজীর্ণ ভবণে পাঠদান,ঝুকিতে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে উপজেলার ৮নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের নন্দিরগাতী গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে এলজিইডি ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ১তলা ভবন নির্মাণ করে। বর্তমানে জরাজীর্ণ ভবনে প্রায় ১যুগ ধরে শিক্ষরা ঝুঁকি নিয়ে চালাচ্ছেন পাঠদান কার্যক্রম। দিন দিন ঝুঁকি আরও বাড়ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবনের এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ ভবনের কারণে অভিভাবকরা অন্যত্র ভর্তি করছে তাদের ছেলে-মেয়েদের। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯৮ জন। বিদ্যালয়টিতে ৫জন শিক্ষকের পদ থাকলেও সেখানে কর্মরত আছেন ২জন। ফলে শিক্ষক সল্পতার কারণেও
পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। জং ধরা ছাদের রডগুলো বের হয়ে আছে। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি চুইয়ে পড়ে ভবনের ভেতরে। এতে করে যেমন শঙ্কায় দিন পার করছে শিক্ষার্থীরা, তেমনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৫ম শ্রেনীর ছাত্র কাইয়ুম হোসেন,ইব্রাহিম খলিল,সানভির মন্ডল জানান, জরাজীর্ণ ভবণে আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে লেখাপড়া করছি। অনেক সময় বাড়ি থেকে বাবা-মায়েরা স্কুলে আসতে নিষেধ করে।


অভিভাবক শরিফুল ইসলাম শরিফ ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল আলিম জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। যেকোনো সময় পুরো ভবন ধসে পড়তে পারে। এমন ভয়ের মধ্যেই চলতে হচ্ছে তাঁদের। সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হয়। ইতিমধ্যে গ্রামের অনেকেই তাদের ছেলে-মেয়েদের অন্য স্কুলে ভর্তি করেছেন। আবার অনেকে তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: যশোর সদর ইউএনও সেই মাকে ঘরে তুলে দিলেন

বিদ্যালয়ের সভাপতি মেনোকা রাণী বিশ^াস জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। তাই আমরা দ্রæত নতুন ভবন নির্মাণের দাবী জানাচ্ছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো: তাজউদ্দিন মোল্লা, প্রতিষ্ঠার পর একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অবস্থা নাজুক। যেকোনো সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। জীবনের ঝুকি নিয়ে আমরা পাঠদান কার্যত্রম চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় ফাঁকা মাঠেই ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছি। অনেকবার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ভবন নির্মানের জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে জানালেও কোন লাভ হয়নি। দ্রæত বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ না করলে শিক্ষাথী সংকট ও নানাবীধ সমস্যা সৃষ্টি হবে। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসরাইল হোসেন বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের তালিকায় আছে। টেন্ডার হলে ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

Spread the love
Link Copied !!